বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ১০ টি পাখি।
আমাদের সবুজ শ্যামল বাংলাদেশের পশুপাখির কোন কমতি নেই। বাংলাদেশের আয়তন অনুযায়ী শতকরা ২৫ ভাগ বনভুমি থাকা দরকার। কিন্তু তা বর্তমানে আছে প্রায় সতেরো ভাগ এবং দিন দিন এ সংখ্যা কমেই চলছে। আমাদের আশেপাশে অনেক পাখিই চোখে পড়ে। কিন্তু বেশির ভাগ পশুপাখিদের দেখা মিলে আমাদের সুন্দরবনে।
আমরা শহরে কিংবা গ্রামে যেখানেই বসবাস করি না কেন বিভিন্ন ধরনের পাখির দেখা আমাদের চোখে পড়ে। সুন্দর-অসুন্দর, কালারফুল, বিউটিফুল এমন সকল ধরনের পাখির আপনি একবার হলেও দেখেছেন। সুন্দর পাখিদের মধ্যে মাছরাঙা, দোয়েল পাখি , কোয়েল, ময়না, টিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি এবং দুই টাকার নোটের উপর সুন্দর পাখির সুন্দর ছবি লক্ষ্য করা যায়। এজন্য হয়ত দুই টাকার নোটকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নোট বলা হয়। টিয়া পাখি বিভিন্ন বাড়ির গেটে পোষা পাখি হিসেবে রাখা থাকে। ময়না কিংবা তোতা পাখি খুব সুন্দর করে নকল করে মানুষের মত কথা বলতে পারে। আজকে আমরা এমনই সব বিশেষ পাখি কিন্তু আমাদের খুবই আমাদের পরিচিত পাখি গুলো সম্পর্কে জানতে চলছি। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১। মাছরাঙা পাখিঃ
মাছরাঙা পাখি |
এবং খুব বেশি লাফিয়ে চলতে বেশ পছন্দ করে। মাছরাঙা পাখি চিনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু আমরা মাছরাঙা টেলিভিশনে নাম শুনেছি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখে থাকি। চ্যানেলের ইন্ট্রো কিংবা লোগোর অ্যানিমেশনে এই বিশেষ পাখি দেখা যায়। তবে তার থেকেও সহজ বিষয় হল এদের গ্রামের দিকে গেলেও স্বচক্ষে দেখতে পাওয়া যায়।
আরও দেখুনঃ টেলিটক এমবি দেখার উপায় ২০২২
২।কোয়েল পাখিঃ
কোয়েল পাখিদের কে ছোট থেকে বৃদ্ধ ব্যাক্তি পর্যন্ত চিনে থাকেন। কেননা শহুরে জীবনে বাজারে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় এবং বানিজ্যিকভাবে এদের বর্তমানে পোষা হয়। এজন্য তো আমাদের দেশে কোয়েল পাখি এবং এর ডিম খুবই জনপ্রিয়তা। মুরগি বা মুরগির ডিম এবং কবুতরের মত মানুষ এদের খেতে পছন্দ করে। এদের মাংস অত্যান্ত সুস্বাদু প্রকৃতির। কোয়েল পাখি শুধু মাত্র একটি প্রজাতির দেখা পাওয়া যায় আমাদের দেশে। এ ছাড়াও এশিয়ান কোয়েল এবং প্যাসিফিক কোয়েলের ও দেখতে পাওয়া যায়।
৩।বাবুই পাখিঃ
বাবুই পাখি আকারে মাছরাঙার কাছাকাছি। বাসা বাড়ি বা তার আশেপাশে গাছ-গাছালিতে এ পাখি গুলো থাকার বাসা বানায়। এ পাখিদের বাসা বানানোর খুবই অসাধারন একটি স্কিল রয়েছে। এই পাখির উপর কবি রজনীকান্ত সেন লিখেছিলেন ” স্বাধীনতার সুখ” । উক্ত কবিতায় বাবুই পাখি এবং চড়ুই পাখির কথোপকথনের মাধ্যমে বাবুই পাখি কীভাবে তার সাধারন ঘরে সুখে থাকে তা উল্লেখ করাছে । এই পাখিটি শহরে অল্পসংখ্যক দেখা গেলও গ্রাম অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।এ পাখিগুলো গ্রামীন জীবনে অনেক বেশি পরিচিত।
৪। দোয়েল পাখিঃ
এই পাখিটির নাম ম্যাগপাই রবিন বা দোয়েল পাখি। এ পাখিটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি এবং এর নাম অনুসারে ঢাকায় দোয়েল চত্বরও রয়েছে। এরা মাঝারি আকৃতির এবং গাছে স্বচক্ষে দেখতে অনেক দৃষ্টিনন্দন দেখায়। সাদা কালোর সংমিশ্রন এই পাখিকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে , মাঝে মাঝে কালোর উপর ডাই মারা থাকে যা পাখিকে দেখতে আরো আকর্ষনীয় করে তোলে।
৫। ময়না পাখিঃ
ময়না পাখি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পাখিদের মধ্যে একটি। বাংলাদেশের কথা বলা পাখিদের মধ্যে এ পাখিগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। নিজে নিজে নতুন কিছু না বলতে পারলেও এরা মানুষের কথার ঠিকই নকল করতে পারে। আমাদের চারপাশে জঙ্গল কিংবা বাগানে, বসত বাড়িত উঠানে এবং নদীর তীরে এদের দেখা যায়। এরা এদের গলার স্বরতন্ত্রীর সাথে হুইসেলের শব্দ মত শব্দ করে যা উঠা নামার কারনে মানুষের মত শোনায়।
৬। সোনাকপালি হরবোলা
সোনাকপালি হরবোলা পাখি |
সবুজ রঙের ছোট এই পাখিটির ইংরেজি নাম ‘গোল্ডেন ফ্রন্টেড লিফবার্ড’৷ বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম এলাকার বিভিন্ন জঙ্গলে এ পাখিটি বেশি দেখা যায়৷ পাখিটি লম্বায় মাত্র ১৯ সেমি. এবং ওজনে ৩০ গ্রাম হয়ে থাকে৷ সোনাকপালি হরবোলা সাধারণত পোকামাকর, ফুলের রস ও পাকা ফল খায়৷
৭। শ্বেত আঁখি
শ্বেত আঁখি |
এ পাখিটির ইংরেজি ‘ওরিয়েন্টাল হোয়াইট আই’ নামের ছোট্ট পাখিটির বাংলা নাম হরেক৷ শ্বেত আঁখি, শ্বেতাক্ষি, উদয় ধলা চোখ, বাবুনাই, চশমা টুনি, চশমা পাখি নানা নামে পরিচিত পাখিটি৷ ‘শ্বেত আঁখি’ বাংলাদেশের সুলভ পাখি৷ দেশের সর্বত্রই কম-বেশি দেখা যায়৷ পাখিটি বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত প্রজাতি বলে বিবেচিত এবং বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত৷
৮।মদনা টিয়া
মদনা টিয়া |
সুন্দর রঙের এ পাখিটির ইংরেজি নাম ‘রোজ ব্রেস্টেড প্যারাকিট’৷ মদনা টিয়া পাহাড়ি জঙ্গলের পাশের হালকা জঙ্গল, জুমচাষের এলাকা ও চা-বাগানের গাছে গর্ত করে বাসা বাঁধে৷ ফল, পুরু ফুল, ফুলরস, ফুলকুঁড়ি এদের স্বাভাবিক খাদ্য৷ তবে ফসল তোলার মৌসুমে কৃষিখেতে দলবেধে হামলা চালায়৷
বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক বিপদজনক প্রানী ২০২২ |Most Dangerous Animals in the world 2022
৯।সিপাহি বুলবুলি
ইংরেজিতে ‘রেড ভিস্কার্ড বুলবুল’ আমাদের দেশে সিপাই বুলবুলি নামেও পরিচিত। এছাড়া বাংলাদেশের কোনো কোনো এলাকায় পাখিটি ঝুঁটি বুলবুল, ঝুঁটকুলি, পাহাড়ি বুলবুল বা চায়না বুলবুল নামেও পরিচিত। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আবাসিক পাখি। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, হংকং ও চীন এই প্রজাতিটির মূল আবাসস্থল।
১০।পাহাড়ি ময়না
পাহাড়ি ময়নার ইংরেজি নাম ‘হিল ময়না’। এছাড়া এটি ময়না, পাতি ময়না, সোনাকানি ময়না নামেও পরিচিত। মানুষের কণ্ঠ হুবহু অনুকরণ করতে পারে এ পাখিটি। আর এ কারণে মানুষ এ পাখির ছানা বন থেকে ধরে খাঁচায় বন্দি করে পোষার কারণে দিনে দিনে এ প্রজাতিটি দুর্লভ হয়ে পড়ছে।
আপনার কাছে কোন পাখি টি সবচেয়ে ভালো লাগছে তা কমেন্ট করে জানান।